রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মাহাবুবুর রহমান হার্টে রিং (স্টেন্ট) পরান একটা, কিন্তু রোগীর কাছ থেকে টাকা নেন তিনটার! শুধু তা-ই নয়, চিকিৎসকদের রিং বিক্রির নিয়ম না থাকলেও তিনি নিজেই রিং বিক্রি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি রংপুর দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে ভুক্তভোগীরা এমন অভিযোগ দিয়েছেন।
পৃথক দুইটি অভিযোগের কপি সাংবাদিকদের হাতে এসেছে। এ ঘটনায় রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বরাবর একজন প্রতিনিধি চেয়ে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীদের একজন গাইবান্ধা জেলা সদরের কুমারপাড়া গ্রামের আতোয়ার হোসেন (৪৫) তার লিখিত অভিযোগে জানান, ডা. মাহাবুবুর রহমান প্রতারণার মাধ্যমে তার হার্টের রক্তনালিতে একটি রিং পরিয়ে তিনটি রিংয়ের টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করেছেন। রিং পরানোর পর তিনি যে সিডি দিয়েছেন, তাতে রিং লাগানোর কোনো প্রমাণ নেই, তবে হাসপাতালের রেজিস্ট্রার খাতায় একটা রিং পরানোর রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু ডা. মাহাবুবুর তিনটি রিং লাগোনোর কথা বলে তার কাছ থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন।
রংপুরের গঙ্গাচড়ার আরেক ভুক্তভোগীর ছেলে মোহা. মশিউর রহমান তার অভিযোগপত্রে জানান, পেটে ব্যথা হলে গত ১১ সেপ্টেম্বর তার মাকে নিয়ে ডা. মাহাবুবুর রহমানের কাছে গেলে তিনি এনজিওগ্রাম করাতে বলেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি এনজিওগ্রাম করেন এবং বলেন যে, তার মায়ের হার্টের রক্তনালিতে ৭৫ শতাংশ ব্লক আছে। তাকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে রিং (স্টেন্ট) পরাতে হবে। বিষয়টি সন্দেহ হলে ঢাকা ন্যাশন্যাল হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ডা. বদিউজ্জামানকে এনজিওগ্রামের সিডি (রেজি নম্বর ১২৫২২/৩২) দেখালে তিনি জানান, তার মায়ের হার্টে কোনো ধরনের ব্লক নেই।
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. মাহাবুবুর রহমান মোবাইল ফোনে ইত্তেফাককে বলেন, ‘এসব ব্যাপারে আমাকে কেউ অভিযোগ করেননি। আমার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে আমার আত্মপক্ষ সমর্থন করার অধিকার আছে।’অভিযোগ প্রসঙ্গে রংপুর দুর্নীতি দমন কমিশনের এক পরিচালক ইত্তেফাককে জানান, ডা. মাহাবুবুরের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে তথ্যানুসন্ধান চলছে। যদি ঘটনার সত্যতা মেলে, তাহলে ঐ ডাক্তারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’