অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির তেমন কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়েই শেখ হাসিনা সরকারের শেষ বাজেটে ধরা হয় উচ্চ রাজস্ব লক্ষ্য। ফলাফল যতই দিন যাচ্ছে, বাড়ছে ঘাটতির পরিমাণ।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও কর বহির্ভূত রাজস্ব লক্ষ্য ধরা হয় ৫ লাখ কোটি টাকার বেশি। তবে অর্থবছরের পাঁচ মাসে লক্ষ্যের তুলনায় আদায় চিত্র হতাশাজনক। এক্ষেত্রে সামনে আনা হচ্ছে পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও সংকটকালীন অবস্থা।
সার্বিক অবস্থায় ছেঁটে ফেলা হচ্ছে চলতি অর্থবছরের বাজেট। রাজস্ব আয় ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) হচ্ছে বড় ধরনের কাটছাঁট। পরিবর্তিত অবস্থায় দুই খাতেই লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন।
অর্থবিভাগ মনে করছে, সংস্কার পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও সুফল দ্রুত পাওয়া যাবে না। তাই বাড়বে না রাজস্ব আদায়। আর উন্নয়ন ব্যয়ে লাগাম টানায় পূরণ হবে না এডিপির লক্ষ্য। এ অবস্থায় রাজস্ব আয় ও এডিপি থেকে ছেঁটে ফেলা হচ্ছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ আয় বাড়াতে উদ্যোগ দরকার। একইসাথে, ব্যয়ের ক্ষেত্রেও দরকার স্বচ্ছতা।
অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, বাজেটে রাজস্ব আয়ের যে পরিমাণ ধরা হয় এর উপযুক্ত ব্যবহার এবং খরচ কাটছাঁট করা উচিত। বাজেটে যে পরিমাণ অর্থায়নের ব্যবস্থা ছিল, এই পুরো অর্থায়ন তো সম্ভব হবে না।
রাজস্ব আদায়ে বড় ভূমিকা রাখা এনবিআরকে সংস্কার করে সক্ষমতা বাড়ানো গেলে বড় অঙ্কের রাজস্ব আয় বাড়ানো সম্ভব। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ট্যাক্সের আইনগত পরিবর্তন, রেটগুলোর পরিবর্তন, সেবা প্রদান, বিরোধ নিষ্পত্তিসহ বেশকিছু বিষয় আছে; যেগুলো ঠিক করতে গেলে সময় লাগবে। এনবিআরের যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তাতে এভাবে হবে না।
আর্থিক টানাপোড়েন ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতায় এডিপি থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি কাটছাঁট হচ্ছে।
এ নিয়ে ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, আগের সরকারের সময়ে যে প্রকল্পগুলো ছিল, সেগুলোতে অপ্রয়োজনীয় অর্থায়নের ব্যবস্থা ছিল। যাতে সেখান থেকে দুর্নীতি ও অন্যায় করা সম্ভব হয়। যেগুলো বাস্তবায়ন হয়ে গেছে, সেগুলোতে তো কিছু করার থাকে না। কিন্তু যেগুলো এখনও বাস্তবায়ন হয়নি, সেগুলোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে গভীর বিশ্লেষণ করা উচিত।
অর্থবিভাগের বাজেট সমন্বয় সভায় কমিয়ে চলতি বাজেটের অন্যান্য লক্ষ্যমাত্রাও আনা হয়।