স্বাধীনতার পর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে বাংলাদেশ। একটা সময় পর্যন্ত টেকশই হয় অর্থনীতির সব সূচক। দারিদ্র্য বিমোচন, মাথাপিছু আয় কিংবা উৎপাদন— সবক্ষেত্রেই হয় উন্নতি। তবে, গেল দশকে ম্লান হয়েছে অনেক অর্জন। আক্রান্ত হয়েছে রাজনীতি ও অর্থনীতি। দুর্নীতি আর লুটপাটে ভঙ্গুর আর্থিক খাত।
এর মধ্যে অর্থনীতি সচল রাখতে বরাবরই ভূমিকা রেখেছে কৃষি। মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিকে শক্ত ভিত্তি দিয়েছে কৃষি। মাটির সবচেয়ে কাছে থাকা কৃষক জানেন মাতৃভূমির স্বাধীনতার মূল্য কত।
তবে দুর্বল বাজার ব্যবস্থা, কৃষি উপকরণের উচ্চমূল্য ও ক্ষেতমজুরের ঘাটতি দূর করা গেলে কৃষিই হবে অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষ– কৃষক, শ্রমিক বা মুদির দোকানের লোক হোক কিংবা রাস্তার পাশে কিছু একটা করছে; তারা কিন্তু সবসময় মাঠে থাকে। যার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির একটা ন্যূনতম গতিময়তা একটা আছে। যেটাকে আমরা রেসিলিয়েন্স বলি। গ্রোথ রেট যেটা বলা হয়, তার মধ্যে ৩-৪ শতাংশ কিন্তু রেসিলিয়েন্স। সরকার যদি একেবারেই চলে যায়, তারপরও ৩-৪ শতাংশ থাকবে। কারণ, মানুষ বসে থাকবে না।
বাংলাদেশে দীর্ঘ এই পথচলায় বড় ভূমিকা রেখেছে শিল্প খাত। মূলত ৯০-এর দশকের পর শুরু হয় ব্যক্তি খাতের উত্থান। তবে, গেল এক দশকে অর্থনীতির সূচক নিয়ে তৈরি হয় গোলকধাঁধা। ব্যাংক, পুঁজিবাজার কিংবা উন্নয়ন— সবখাতেই হয় দুবৃর্ত্তায়ন। যা লাল-সবুজের এই দেশকে করেছে পেছনমুখী।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনার সময়কালে শুধু গণতন্ত্রকে নির্বাসন দেয়া হয়েছে তা নয়, অর্থনৈতিক গণতন্ত্রকেও নির্বাসন দেয়া হয়েছিল। সেটা বাংলাদেশকে এক ধরনের লাইনচ্যুত করে ফেলছে। আমরা অত্যন্ত একপেশে কিছু সূচকের দিকে অতিমাত্রায় নজর দিয়েছি। দুর্নীতি যেটা হয়েছে, সেটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেলে হয়েছে।
জন্মের ৫৩ বছরে বাংলাদেশকে টপকে গেছে কয়েকটি দেশ। উচ্চ মূল্যস্ফীতি মানুষকে করে তুলেছে দুর্বিষহ। কমতে থাকা দারিদ্র্য হার হচ্ছে ঊর্ধ্বমুখী।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, গার্মেন্টস ও প্রবাসী আয়— নব্বই থেকে এ দুইটাই কিন্তু আমাদের প্রবৃদ্ধির চালক। এখন কিন্তু নতুন প্রবৃদ্ধি চালক চালুর সময় চলে আসছে। কিন্তু আমরা সেগুলো খুঁজতেছি কি না, সেগুলোকে আমরা জোরালো সমর্থন দিচ্ছি কি না।
এ অবস্থায় বিজয়ের ৫৪তম দিবসে প্রত্যাশা দেশবাসীর প্রত্যাশা, সবকিছু ছাপিয়ে নবোদ্যমে ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি। দেশের প্রতি সকলের ভালোবাসা উজ্জীবিত হোক।
নিত্য নতুন খবর পেতে চোখ রাখুন
দৈনিক বিশ্ব অনুসন্ধান